পোস্টগুলি

মার্চ, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বিনির্মাণঃ ধ্বংসাত্মক সমালোচনার বৈধতা

ছবি
দেরিদা এই মুহুর্তে বাংলাদেশে খুব প্রাসঙ্গিক। দেশে সাহিত্যিক, চিন্তক বা টেক্সট মেইকারদের সাম্প্রতিক অনলাইন গোলাগুলি ও মারামারি দার্শনিক জাক দেরিদার ‘Deconstruction বা বিনির্মাণ’ নিয়ে নতুন করে আলোচনা করার সুযোগ করে দিয়েছে। ভাষা অত্যন্ত সীমাবদ্ধ একটি মাধ্যম। ভাষার মাধ্যমে আমরা সর্বশেষ চূড়ান্ত কোন ধারণা পেতে পারি না। কারণ ভাষা অস্থির, সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। আজ যা বোঝাচ্ছে, কাল তা নাও বোঝাতে পারে। আপনি যা বুঝছেন আমি তার উল্টোটা বুঝতে পারি। আমি এখন যা বুঝছি পরে আমার কাছে প্রয়োজন অনুযায়ী এর অর্থ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ ভাষার বাজারে চিরস্থায়ী ‘বেদবাক্য’ বলে কিছু নেই । আপনি যে কোন টেক্সট বা লেখাকে সমালোচনা করতে পারবেন , নিজের মত করে ব্যাখ্যা বা সমালোচনা করতে পারবেন। সমালোচনার অধিকার সকলের। আপনি যে কোন লেখা বা টেক্সটকে গুরু-লঘু, হালকা- ভারী, সাদা-কালো , ভালো-মন্দ বলতে পারেন। কিন্তু বিনির্মাণে এইসব বাইনারি বিশেষণকে অস্বীকার করা হয়েছে। ভালো মানে আপনার কাছে ভালো, আমার কাছে মন্দ হতে পারে- এবং এটা বলার অধিকার আমার আছে । আসলে এই ধরনের সকল বাইন...

প্রশান্ত বুদ্ধ

ছবি
  কিভাবে বুদ্ধের শিক্ষা ও দর্শন এত দ্রুত সারা দুনিয়া ছড়িয়ে যায়, কি কারণে  বুদ্ধ নিষ্কণ্টকভাবে  ধর্ম প্রচার করতে পেরেছিলে্‌ন,  আর কেনইবা তার ধর্ম-দর্শন  সারা পৃথিবীতে সগৌরবে বিরাজ করলেও জন্মভূমি ভারতবর্ষে মিইয়ে গেছে? বুদ্ধ ছিলেন রাজপুত্র।  তিনি পেয়েছিলেন তৎকালীন এ এলাকার সমস্ত রাজাদের আনুকূল্য। সর্বভারতীয় সম্রাট অশোক,   মগধের রাজা বিম্বিসার, কৌশল্যের  রাজা প্রসেনজিৎ,  সাচি ও বারহুতের শাসনকর্তা, রাজা মিনান্দারসহ   উত্তর-পশ্চিম ভারতের গ্রিক বংশদ্ভুত  শাসকগণ  সকলেই উদারভাবে বুদ্ধের মত গ্রহণ করেছে ও প্রচারে সাহায্য করেছে।  স্বাভাবিকভাবেই,  বুদ্ধের বাবা ও তার সমসাময়িক রাজাগণ সকলে উদার চিত্তে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন এবং এ ধর্মের মহিমা প্রচার করেন । কুষাণ  সম্রাট কনিষ্কের চেষ্টায় প্রথম শতাব্দীতে বৌদ্ধধর্ম পৌঁছে যায় কাশ্মীর, ইরান,  আফগানিস্তানের কাছাকাছি। শীঘ্রই চীনসহ মধ্য এশিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে বৌদ্ধধর্ম।  সম্রাট অশোক শ্রীলংকা, কম্বোডিয়া,  লাউস, থাইল্যান্ডবাসীদের কাছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পাঠান । আজ থেকে ১...

মসলাদার ইতিহাস

ছবি
  উপনিবেশায়নের ইতিহাস রক্তাক্ত। তবে ভারতীয় উপমহাদেশসহ পূর্ব-ভারতীয় দীপপুঞ্জ অঞ্চলের উপনিবেশায়নের ইতিহাস শুধুমাত্র রক্তাক্তই নয়– এ ইতিহাস অধিকতর মসলাযুক্ত। আধা কাঁচা, পোড়ানো স্বাদহীন মাংস, মাছ, মদসহ অন্যান্য ইউরোপীয় খাবারের মধ্যে গোলমরিচ ও লবঙ্গের গুড়ো ছিড়িয়ে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা পৃথিবীর ইতিহাসকে গড়ে তুলেছে নতুনভাবে।   কালিকট শুধু ভারতবর্ষের প্রধান বন্দর ছিল না, ছিল ইতিহাসের দরজা। দিনে দিনে কালিকট হয়ে উঠেছিল এক মৌচাক, সারা দুনিয়ায় এর মধুর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। আকারে ছোট হলেও, দুই হাজার বছর ধরে এর বাণিজ্যিক সমৃদ্ধি গড়ে তুলেছে ভারতবর্ষের দ্বার হিসেবে। প্রধান বাণিজ্য মসলা, ভারতবর্ষের বাইরে মালয়-ইন্দোনেশিয়া হতে উৎপাদিত মসলাও চলে আসতো কালিকটে। এই মশলা বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ সরাসরি জড়িত ছিল ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধের সাথে। নামে ধর্মযুদ্ধ হলেও এ যুদ্ধে বাণিজ্যিক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল আরো বেশি। ধর্ম যুদ্ধের শুরুতে ইউরোপীয় শক্তি সাফল্য লাভ করলেও পরের দিকে ৪র্থ ক্রুসেডে মুসলমানরা বীর সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করে এবং মিশর দখল করে নেয়। ...