পোস্টগুলি

Lifestyle লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মানুষের সুখ-দুঃখ নিয়ে তিনটি ব্যাখ্যা

  মানুষের সুখ-দুঃখ নিয়ে  তিনটি ব্যাখ্যা আমার ভাল লাগে। ১. বুদ্ধের দর্শনঃ যখন মানুষ কষ্টে আছে বলে মনে করে এবং তা দূর করার জন্য নানারকম শারিরীক ও মানসিক যাতনার মধ্যে দিয়ে যায়, আরো  কষ্ট করে--যাতে তার দুঃখ দূরীভুত হয়, কিন্তু আসলে এটা  তাকে আরো অসুখী করে। আবার যখন কোন মানুষ নিজেকে সুখী মনে করে এবং তা চিরস্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য নানারকম মানসিক ও শারীরিক কষ্ট করে, এটা তাকে আরো দুঃখের মধ্যে ফেলে দেয়। অর্থাৎ আপনার সুখ অর্জন বা দুঃখ দূর করার অতি উপায় না খূঁজে বেড়ানোই আপনাকে সুখী রাখতে পারে। অবস্থার পরিবর্তনের আকাঙখা কিংবা বর্তমানকে সজোড়ে আকড়ে ধরে রাখার প্রচেষ্ঠাই আপনার সুখ কেড়ে নেবে। ঠিক কাছাকাছি ধরণের ব্যাখ্যা পাওয়া যায় দুঃখবাদের দার্শনিক আর্থার শোপেনহাওয়ারের কাছে।  তার মতে, রিপিটিভ প্লেজারকেই সুখ বলে। দুনিয়াতে দুঃখের চেয়ে সুখ কম, সুখ ক্ষণস্থায়ী।  আপনার সুখী হওয়ার আকাংখা অন্যের দুঃখের দামে কেনা। অর্বাচীন লোকদের বদভ্যাস হচ্ছে সুখ শিকার করে বেড়ানো। নিজের মধ্যে সুখ খুজে পাওয়া কঠিন, অন্য কোথাও পাওয়া অসম্ভব। ২. সায়েন্সঃ সুখ-দুঃখের  জন্য দায়ী হরমোনের হ্রাস-বৃ...

কোরবানির অর্থনীতি

  অতিসামান্য অর্থনীতির জ্ঞান দিয়ে যা বুঝি বাজারে টাকা বা মুদ্রার ফলপ্রসু কন্ট্রিবিউশন  মাপার জন্য ব্যবহার করা হয় মাল্টিপ্লাইয়ার ইফেক্টকে।  কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছাপানো টাকা হাতবদল হয়ে ঘুরতে থাকে-  যতবেশি হাতবদল হবে অর্থনীতি ততবেশি গতিশীল হবে। মানুষের হাতে টাকা যাবে, খরচ হবে,  আরেকজন পাবে -এভাবেই অর্থনীতি এগিয়ে যাবে। কোন এক বড় ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজ বা কালোটাকার মালিক যদি টাকা  বিদেশ পাচার করে দেয়, তাহলে মাল্টিপ্লায়ার  ইফেক্ট বন্ধ অথবা ধীর  হয়ে যায়। অপরদিকে ইদ, পহেলা বৈশাখ,  গ্রাম কেন্দ্রিক ক্ষুদ্র কৃষক, ব্যাবসায়ীর  ইনকাম, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর টাকাগুলো অনেক  বেশি হাতবদল হয়, অর্থনীতিকে প্রাণ দান করে। এই ধরুন সামান্য গরু পালনের সাথে জড়িত ঘাস-পশুখাদ্য-দুগ্ধজাতপন্য ব্যবসায়ী,  চামড়া ব্যবসায়ি,  মসজিদ- মাদ্রাসা- এতিমখানা,  ট্রান্সপোর্ট শ্রমিক, দালাল, কসাই,  রাখাল, দোকানদার ইত্যাদি। এর বাইরেও কত নাম জানা অজানা পেশার কত জন যে জড়িত তা আংগুল গুনে হিসেব করা সম্ভব না। এরা যা পায় তা দিয়ে চালু রাখে গ্রামের চাল, ডাল,...

থিংক এন্ড গ্রো রিচ এর মর্মকথা

  উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা ধনী  এন্ড্রু কার্নেগি।  বিশাল বিত্ত আয়ের গোপন ফর্মুলা  ও সফলতার গল্প শোনার জন্য একদিন এক তরুণ সাংবাদিক মিঃ কার্নেগির ইন্টারভিউ নিলেন। তিনি সাংবাদিকের উৎসাহ, জ্ঞানে মুগ্ধ হলেন। মিঃ কার্নেগি  সাংবাদিককে একটি দ্বায়িত্ব দিলেন। ঐ সময়ের বিখ্যাত ও বিত্তশালী ৫০০ জনকে ইন্টারভিউ করতে হবে, প্রাপ্ত তথ্য ও জ্ঞান হতে সাধারণ মানুষের উপযোগী করে সফলতার উপর ফর্মুলা তৈরি করে দিতে হবে। প্রাপ্ত তথ্য  এনালিসিস দ্বারা    সাংবাদিক সাহেব  লিখলেন এ জনরার সর্বকালের সেরা বইটি- থিংক এন্ড গ্রো রিচ। লেখক নেপোলিয়ন হিল তার সময়ের সেরা ৫০০জনকে ইন্টারভিউ করে ক্ষান্ত হননি, বিশ-পচিশ বছর ধরে এনালিসিস করেছেন  আরো ২৫০০০ মানুষের বৈশিষ্ঠ্য , সফলতার ও ব্যার্থতার কারণ।  ভালো লাগার ব্যাপার হল রিচনেসকে মিঃ হিল শুধুমাত্র ধনসম্পদ টাকা পয়সার দ্বারা নির্ধারণ করেননি। সম্পদ বলতে তিনি অর্থ বিত্তের পাশাপাশি সুখ্যাতি, নামযশ, পলিটিক্যাল ইনফ্লুয়েন্স , স্পিরিচুয়াল গেইন, ভাল স্বাস্থ্য, সুন্দর পারিবারিক সুখী জীবনকে বুঝিয়েছেন। এই সম্পদ অর্জনের জন্য তিনি ধাপ...

সহজিয়া পথঃ তাও তে চিং

আজ হতে ২৬০০/২৭০০ বছর পূর্বে মহান দার্শনিক লাও ৎস শিখিয়েছেন কিভাবে প্রতিযোগীতাহীন শৈল্পিক নির্জনতার ও নিরাসক্ত আনন্দের  মধ্যে সুখী জীবনযাপন করতে হয়। কনফুসিয়াসের সমসাময়িক এ চৈনিক দার্শনিক সহজ-সরল ও পাশবিক উত্তেজনাহীন ভরপুর সুখী জীবনের কথা বলে গেছেন। তিনি নাগরিক  জীবন হতে ছুটি নিতে বা জীবন সংগ্রাম হতে  পলায়ন করতে বলেন নি, দিয়েছেন উদ্বেগ-উৎকন্ঠাহীন নিরাসক্ত আনন্দঘন জীবনের সন্ধান। তিনি বলেছেন মহান তাও অর্জনের  কথা। তাও সংজ্ঞায়নের বাইরে  এক স্বাধীন সার্বভৌম,  যাকে অনুভবে পাওয়া যায়, সাধনা করে অর্জন করে নিতে হয়। লাও ৎস তার ছোট ছোট পংক্তিমালার মাধ্যমে তাও খুঁজে পাওয়ার পথের সন্ধান দিয়েছেন। “যদি বা মুক্ত হও বাসনা থেকে   তবে রহস্যকে পাবে যদি পড়ে থাক বাসনাকে নিয়ে কেবলই পাবে প্রকাশ্যকে”/ তাও এর  সন্ধান দেখেছেন লাও ৎস নিরাসক্ততার মাঝে— / “যখন কিছু জাগে জাগতে দেন যখন কিছু লুপ্ত হয় বিলুপ্ত হতে দেন— তিনি প্রত্যাশা ছাড়াই কাজ করে যান’’। / “কিছু না, অনুশীলন করো, কোন চেষ্ঠা ছাড়াই সবকিছু পাবে”/ তাও অর্জনে লাও ৎস বলেছেন সঠিক কর্মপন্থার কথা । কি করতে হবে আর কি করা উন...

রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড- এর সারমর্ম

  কেন এর আগে পড়িনি? এই বইটি হাতে পেতে এত দেরি হল কেন, স্কুল কলেজে থাকার সময় পড়া হলো না কেন? রবার্ট কিয়োসাকির " রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড"   বইটা পড়ে আজব এক ধরণের হতাশা জন্ম নিয়েছে, যেটি অন্য তেমন কোন বই এর ক্ষেত্রে হয় নি। আমার দৃষ্টিতে ৪/৫ ঘন্টা সময় এর পেছনে ব্যয় করা বেশ চমতকার একটি বিনিয়োগ। প্রচলিত স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি  শিখায় পড়াশোনা করে কিভাবে একটি কাজ পাওয়া যায় এবং তার উপর ভিত্তি করে কিভাবে চাকরি করে উপার্জন করা যায়। কিয়োসাকি এখানেই আলাদা। তার মতে প্রচলিত শিক্ষায় কাজ পাওয়া শিখায়, টাকা উপার্জন শিখায় না,  অফিস/বস/ ম্যানেজমেন্ট শিখায়, ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট শিখায় না। রিচ ড্যাড পূওর ড্যাড বইটির চুম্বক অংশ হচ্ছে লেখকের নিজস্ব ব্যাখ্যাত  ক্যাশ ফ্লো সিস্টেম। এসেট লায়াবিলিটিকে তিনি প্রচলিত সংগার বাইরে এনে দেখিয়েছেন,  আমরা যেটিকে প্রচলিত অর্থে এসেট (বাড়ি/ দামি গাড়ি/ গ্যাজেটস ইত্যাদি) ভাবি,  আসলে এগুলো লায়াবিলিটি। এসেট সেগুলোই যেগুলো দিয়ে আপনার পকেটে টাকা আসে,   আর যা দিয়ে টাকা  বের হয়ে যায় সেগুলো লায়াবিলিটি।  গরীব ও মিডল ক্লাসরা লায়াবিলিটিক...

ব্যাঙ খান বা বিড়াল মারুন

  এর কাছাকাছি ভাবানুবাদ হতে পারে ‘বিড়াল মারা’। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে নানা পর্যায়ে নানা ধরণের অসংখ্য  বিড়াল আসে, উৎপাত করে,  কর্মস্পৃহাকে থামিয়ে রাখে। ক্যারিয়ার ও জীবনে সফল হওয়ার জন্য যথাসময়ে সঠিক বিড়ালটি মারা উচিত, অথবা বিড়ালটিকে তাড়িয়ে দেয়া উচিৎ। ‘ইট দ্যাট ফ্রগ’, ব্যাঙ খাওয়া বা বিড়াল মারা খুব গুরুত্বপূর্ণ । যা আমাদের নতুন কিছু শুরু করতে, লক্ষ্য পূরণ করতে , আমাদের ক্যারিয়ারে, ব্যাক্তি জীবনে সফল হওয়ার পথে মানসিকভাবে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাই হচ্ছে ‘ব্যাঙ’ বা ‘বিড়াল’। এ বাধাগুলোকে দূর করার জন্য  কিছু পরীক্ষিত পদ্ধতি বা কর্মপন্থা অনুসরণ করলে সফল হওয়া যায়। কারো জন্য এ বাধা শুধু আলসেমি বা  দীর্ঘসুত্রিতা। কারো জন্য  শুরু করার সাহসের অভাব, কোনটা আগে কোনটা পরে শুরু করব এ নিয়ে সিদ্ধান্থীনতা বা অসফল হওয়ার  নানা ধরণের অহেতুক ভয়। তবে সঠিক পদ্ধতিতে সামনের দিকে আগালে এ সকল সমস্যা খুব বেশি বড় বাধা হয়ে দাড়াতে পারে না। ইতালিয়ান অর্থনীতিবিদ ভিলফ্রেডো প্যারেটো তত্বটি দাড় করিয়েছিলেন অর্থণীতির শ্রেণীবিভেদ ব্যাখ্যা করার জন্য । তিনি বলেছিলেন ২০% শোসক শ্রেণী ৮০% আমজনতার উপর অর্থণ...