প্রশান্ত বুদ্ধ

 কিভাবে বুদ্ধের শিক্ষা ও দর্শন এত দ্রুত সারা দুনিয়া ছড়িয়ে যায়, কি কারণে  বুদ্ধ নিষ্কণ্টকভাবে  ধর্ম প্রচার করতে পেরেছিলে্‌ন,  আর কেনইবা তার ধর্ম-দর্শন  সারা পৃথিবীতে সগৌরবে বিরাজ করলেও জন্মভূমি ভারতবর্ষে মিইয়ে গেছে?



বুদ্ধ ছিলেন রাজপুত্র।  তিনি পেয়েছিলেন তৎকালীন এ এলাকার সমস্ত রাজাদের আনুকূল্য। সর্বভারতীয় সম্রাট অশোক,   মগধের রাজা বিম্বিসার, কৌশল্যের  রাজা প্রসেনজিৎ,  সাচি ও বারহুতের শাসনকর্তা, রাজা মিনান্দারসহ   উত্তর-পশ্চিম ভারতের গ্রিক বংশদ্ভুত  শাসকগণ  সকলেই উদারভাবে বুদ্ধের মত গ্রহণ করেছে ও প্রচারে সাহায্য করেছে।  স্বাভাবিকভাবেই,  বুদ্ধের বাবা ও তার সমসাময়িক রাজাগণ সকলে উদার চিত্তে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন এবং এ ধর্মের মহিমা প্রচার করেন । কুষাণ  সম্রাট কনিষ্কের চেষ্টায় প্রথম শতাব্দীতে বৌদ্ধধর্ম পৌঁছে যায় কাশ্মীর, ইরান,  আফগানিস্তানের কাছাকাছি। শীঘ্রই চীনসহ মধ্য এশিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে বৌদ্ধধর্ম।  সম্রাট অশোক শ্রীলংকা, কম্বোডিয়া,  লাউস, থাইল্যান্ডবাসীদের কাছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পাঠান । আজ থেকে ১৩০০ বছর আগেই কোরিয়া ,  জাপান , তিব্বত , মঙ্গোলিয়ায় বুদ্ধের বাণী  পৌঁছে যায়। বুদ্ধের তীরোধানের পর তার ভাবশীষ্য নাগার্জুন,  নাগসেন, শীলভদ্র,  দীপঙ্কর বৌদ্ধধর্ম প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন।  শীলভদ্র ও দীপঙ্কর ছিলেন বাংলার বিক্রমপুরের সন্তান। 



ধর্ম গুরুদের নেতৃত্বে  বৌদ্ধধর্ম অন্যান্য এলাকায়  স্বগৌরবে বিরাজ করলেও  ভারতবর্ষে এর  ভাঁটা দেখা যায়। উপযুক্ত নেতৃত্ব, পৃষ্ঠপোষক ও প্রচারকের অভাব,  অভ্যন্তরীণ কোন্দল , বারবার শক্তিশালী  বহিঃশত্রুর আক্রমণে  বৌদ্ধধর্ম কোণঠাসা হয়ে পড়ে ।  শংকরাচার্য কর্তৃক হিন্দুধর্মের ব্যাপক সংস্কার ও প্রসার  এ ধর্মটিকে  পুনর্জীবন প্রদান করে, অন্যদিকে বৌদ্ধধর্ম  ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ে।



বিস্ময়করভাবে বুদ্ধ আজও প্রাসঙ্গিক । প্রাসঙ্গিক তার প্রদত্ত শিক্ষা ও দর্শন।



আজ হতে আড়াই হাজার বছর পূর্বে হিমালয়ের কোলে ছোট্ট রাজ্য কপিলাবস্তুতে রাজ পরিবারের জন্ম নেয়  সিদ্ধার্থ গৌতমা।   রাজপ্রসাদের ভোগবিলাস , সুন্দরী স্ত্রী,  প্রিয়তম শিশুপুত্রসহ   সকল বন্ধন ছিন্ন করে বেরিয়ে পড়েন মানব জীবনের  এক রহস্যময় প্রশ্নের সন্ধানেঃ  কেন  দুঃখ আসে এ জীবনে, এ ব্যাথা দূর হবে কিভাবে? 




অনেক অনেক পথ ঘুরে  সিদ্ধার্থ পৌঁছে যান বৈশালী রাজ্যে।  বৈশালীর বিখ্যাত সাধক আলার কালামের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন তিনি।  কিন্তু গুরু শিষ্যের মনের তৃষ্ণা মেটাতে পারেনা। সেখান থেকে বের হয়ে নানা জায়গা ঘুরে তিনি চলে আসেন মগধ রাজ্যে।   মগধের  রাজা বিম্বিসার তরুণ এ সন্ন্যাসীকে  নিজ রাজগৃহে ফিরে যেতে বলেন।   সিদ্ধার্থ জানান- দুঃখ, জরা,  রোগ, শো্‌ক,  মৃত্যুর রহস্য ভেদ করাই তার জীবনের লক্ষ্য। রাজা বিম্বিসার মুগ্ধ হন,  সিদ্ধার্থের  শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন । রাজগৃহের পন্ডিত উদ্দকের  কাছে অনেক কিছু শিখে তিনি আবার বেরিয়ে পড়েন। 




মগধের উরুবিল্ব নামক স্থানে আস্তানা গাড়েন।  কঠোর সাধনায় নিমগ্ন হন।  সারাদিন উপোস থেকে দিনরাত ধ্যান করার মত শারীরিক কষ্টের পথ বেছে নেন।  শরীর শুকিয়ে যায়,  মন অসাড় হয়ে যায়।




ছয় বছর পার হয়ে যায়।   উত্তর মেলে না।  নিজের সাথে বোঝাপড়া করেন  সিদ্ধার্থ।  বুঝতে পারেন,  এভাবে শরীরকে কষ্ট দিয়ে,  মনকে জানা যাবে না।   সতেজ শরীর রাখে শান্ত মন। বহু বছর বাদে আবার ভিক্ষা শুরু করেন।  আর নিজের মনের সাথে তর্ক করেন।



 সিদ্ধার্থ মনের প্রশ্ন ও তর্কগুলোকে দুই ভাগ করেন।  প্রথম ভাগে বদ ইচ্ছা,  হিংসা,  বিদ্বেষ,  লোভ ইত্যাদি।  দ্বিতীয় ভাগে আত্মনিয়ন্ত্রণ,  সংযম, প্রেম,  বন্ধুত্ব  ইত্যাদি।  তিনি উত্তর পান লোভ ভয়ংকর অকল্যাণকর।  সীমাহীন চাওয়ার  কাছে সকল জ্ঞান  অসাড়;  হৃদয় প্রসারিত হয় না- সংকুচিত হয়, ,  মনের শান্তি নষ্ট হয়।   যুক্তি তর্ক খাটিয়ে  সিদ্ধার্থ মন থেকে দূর  করেন হিংসা ও বিদ্বেষ।    লোভ ও হিংসা না থাকলে মনের যে  সজীবতা তৈরি হয়–  তা থেকে আসে প্রেম ,মৈত্রী্‌, বন্ধুত্ব  ও সহমর্মিতা। এ আবিষ্কারে  সিদ্ধার্থ হৃদয়  আনন্দে পরিপূর্ণ য়,  তিনি পান  নতুন জীবনের  সন্ধান।  দুঃখ রহস্যের জট খুলে   ফেলেন ।




  আমাদের সকল দুঃখের কারণ আমাদের চাওয়া,  আমাদের কামনা ও বাসনা।  চেয়ে না পেলে কষ্ট পাই।  যার চাওয়ার শেষ নেই,  তার জীবন দুঃখ জলে ভরা  আটলান্টিক মহাসাগর।  এগুলো আসলে বুদ্ধের সকল কথার সারকথা।  ধ্যানের মাধ্যমে এই মহাজ্ঞান অর্জনের মাধ্যমেই  ছত্রিশ বছর বয়সে সিদ্ধার্থ হয়ে যান বুদ্ধ। 




বুদ্ধ মানে পরম জ্ঞানী। 




মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞানের কারণে নানা ইচ্ছের সৃষ্টি হয়।  ইচ্ছেগুলো নিয়ে ভাবতে হয়। ভাবতে ভাবতে মাথার ভেতর  চিন্তার জট লেগে যায়।  এ চিন্তা মানুষের পাঁচটি ইন্দ্রিয়কে পরিচালিত করে । অনেক কিছু দেখতে ইচ্ছে করে, নানা কিছু শুনতে ইচ্ছে করে,  বিভিন্ন ধরনের  সুঘ্রাণ নিতে ইচ্ছে করে,  পরম আকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি বা বস্তুর স্পর্শ পেতে ইচ্ছে করে,  ভালো-মন্দ খেতে ইচ্ছে করে। 




ইচ্ছে-কামনাগুলোকে  পূরণ করার জন্য মানুষ সবকিছু আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। খুব লোভ হয় জীবনের প্রতি।  বার্ধক্য মৃত্যু মানতে পারেনা।  




 বুদ্ধের  পরিমিতিবোধ   হৃদয় প্রশান্ত করে দেয়। তিনি দুই চরম পথ ত্যাগ করে  মধ্যপথ অবলম্বন করতে বলেন। এক- ইতর জনের মতো ভোগ বিলাসে মত্ত হওয়া যাবেনা,  কামনা বাসনার  কাছে নিজেকে সমর্পণ করা যাবে না’;  দুই-অযাচিত দৈহিক কষ্টের মধ্য দিয়ে নিজের শরীর ও আত্মাকে  দুর্বল করা যাবে না। এর মাঝামাঝি পরিমিত যে পথ, বুদ্ধ  তার নাম দিয়েছেন সোনালী পথ। 




সোনালী পথের দিশা পেতে গেলে,  সার্থক ও সুন্দর জীবনের জন্য  আটটি ধাপ  পার হতে হবে। চোখ ও মনের সংযোগ ঘটিয়ে সত্যকে সত্য হিসেবে- মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে দেখতে হবে, আমাদের দেখার দৃষ্টিভঙ্গি হবে সৎ;  সৎ দৃষ্টি হল বুদ্ধের সোনালী পথের প্রথম ধাপ। নিজের  কু-ইচ্ছা,  লোভ হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে অন্যের উপকার করার সদিচ্ছা পোষণ করতে হবে।  মিথ্যে, গীব্‌ত,   কটু  কথা ত্যাগ করে  পরীশীলিত বাক্যালাপের মাধ্যমে  বড় মনের পরিচয় দিতে হবে। চুরি,  ছলচাতুরি,   প্রাণী হত্যা ইত্যাদি ত্যাগ করে  সৎ ও ন্যায় পেশা অবলম্বন করতে হবে, সৎ কাজ করতে হবে,  সত্য মিথ্যার প্রভেদ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মনকে পাপ এবং হিংসা  থেকে দূরে  রাখতে হবে,  যদি পাপ ও হিংসা এসে ভর করে- তা  বিতাড়িত করার শক্তি রাখতে হবে; যদি অন্যের প্রতি সহানুভূতি জন্মায় তবে সে অনুভূতি  দীর্ঘায়িত করতে হবে  সব সময়ের জন্য– অন্যকে  ভালোবাসার জন্য মনকে অবারিতভাবে খোলা রাখতে হবে সর্বদা। অর্জিত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে  কাজে লাগানোর জন্য চাই প্রখর স্মৃতিশক্তি। কখনো কোন সংশয় আসলে  পূর্বের স্মৃতিকে কাজে লাগিয়ে তা দূর ককরতে হবে।  এই সাতটি ধাপ যারা আয়ত্ত  করে নিজের মনকে সম্পূর্ণরূপে বশ করবে তারাই সোনালী পথের অষ্টম ধাপ অর্থাৎ ‘ সম্যক সমাধি’ অর্জন করতে পারবে। 




আপনি  ‘সম্যক সমাধি’ অর্জন করেছেন কিনা তা নিজেই পরীক্ষা করতে পারবেন।  ‘সম্যক সমাধি’  অর্জিত হলে চার প্রকারের ধ্যানের মধ্যে চলে যেতে পারবেন। প্রথম ধ্যানের পর্যায় হচ্ছে আপনার হৃদয় থেকে  চাওয়া-পাওয়া ও হিংসা দূরীভূত হবে।  দ্বিতীয় পর্যায়ের ধ্যানে গিয়ে আপনার সকল তর্ক ও দ্বন্দ্বের জট খুলে গিয়ে চিন্তা স্বচ্ছ হয়ে যাবে।  তৃতীয় পর্যায়ে আপনি নিজের মনকে বশীভূত করতে পারবেন– নিজের মনকে স্বাধীন ঘোষণা করতে পারবেন– আপনার মনকে অন্যের সুখ বা ভালোলাগার ভাগ নিতে হবে না।  যখন আপনার মন  সুখে বা দুঃখে সব সময় স্থির থাকবে– ক্ষণস্থায়ী এই পৃথিবীর ভালোলাগা মন্দলাগা আপনাকে স্পর্শ করতে পারবে না,  তখন আপনি ধ্যানের চতুর্থ পর্যায়ে।




জীবনকে দুঃখ থেকে রক্ষা করতে বুদ্ধের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা হচ্ছে প্রশান্ত থাকা।  প্রশান্তি অর্জন করা শ্রেষ্ঠ মানুষটির  চারটি গুন থাকবেঃ মৈত্রী,  করুণা,  মুদিতা ও উপেক্ষা। বন্ধু বা কাছের মানুষের জন্য যেভাব উদয় হয় তা হচ্ছে মৈত্রী, দুঃখী মানুষের দুঃখে দুঃখ পাওয়া- এবং তাদের  দুঃখ দূর করার ইচ্ছে হচ্ছে করুণা, অন্যের সুখে সুখী হওয়া  মুদিতা।  এ তিন ধাপ  পেরিয়ে মানুষ যখন দুখে কাতর হয় না কিংবা সুখে মহোগ্রস্ত হয় না, মন সর্বদাই শান্ত রাখে তখন তাকে বলে উপেক্ষা। সংসারী মানুষের জন্যেও এই চারটি  উপদেশ পালনীয়। 





বুদ্ধের সাধনার চূড়ান্ত ধাপ হচ্ছে  নির্বাণ লাভ করা। নির্বাণ অর্থ নিভে যাওয়া;  যাবতীয় দ্বেষ,  লোভ এবং মোহ নিভিয়ে ফেলা । অর্থ,  বিত্ত , খ্যাতি , সম্মান,  ক্ষমতা ,রুপ-যৌব্‌ন, ভোগ-বিলাস,   আরাম-আয়েশ সবকিছুর মোহ নিভিয়ে ফেলা। এসব কিছু বিনাশ  করলেই মনে মৈত্রী,  করুণা,  মুদিতা ও উপেক্ষা ভাব প্রকাশিত হয়।  





 মায়া, লো্‌ভ,  ঘৃণা  আমাদের ভেতরটিকে,  আমাদের আত্মাকে  শিকল বন্দি করে রাখে।  পাখির মত আমাদের এই মন শিকল বন্দি থাকলে কষ্ট পায়।  নির্বাণ লাভ আমাদের এই কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে পারে।





বুদ্ধ উপদেশগুলো তার সঙ্গী-সাথীদের বিলিয়ে দেন। ব্রাহ্মণ-চন্ডাল,  সাধক-নিপীড়ক  তার সাথী-শিষ্য হয়।  ধর্মের বাণী প্রচার করতে সকলকে নিয়ে বুদ্ধ সংঘ তৈরি করেন। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব,  উদ্দীপক ভাষণের মাধ্যমে আধুনিক শ্রেণিকক্ষের মতো করে বুদ্ধ তার শীষ্যদের  দর্শন ব্যাখ্যা করতেন।  গয়া,  বারাণসী, মগধসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের রাজা-প্রজা সকলেই বুদ্ধের  সুশীতল বাণীর ছায়াতলে আশ্রয় নেয়।  ছেলের গৌরব গাথা  পিতার কানে যায়।  রাজা শুদ্ধোধন বুদ্ধকে কপিলাবস্তুতে ডেকে পাঠান। পিতা-মাতা,  স্ত্রী-সন্তান সকলের সাথে বুদ্ধের সাক্ষাৎ হয়। পুত্র রাহুল তার সংঘের সদস্য হয়। পিতা শুদ্ধোধনের মৃত্যুর পর  মা মহাপজাপতি গৌতমী   ও স্ত্রী যশোধরা সন্ন্যাসিনীর বেশে বুদ্ধের কাছে আসেন।  বুদ্ধ প্রথমে মহিলাদেরকে তার সংঘের  সদস্য করতে রাজি না হলেও, পরে  অন্যতম প্রধান শিষ্য  ও চাচাতো ভাই আনন্দের পরামর্শে  ভিক্ষুণী সংঘ  স্থাপন করে নারীদের  ধর্ম সাধনায় অংশগ্রহণ করা সুযোগ করে দেন।  বিশাখা,  আম্রপলি তার সর্বশ্রেষ্ঠ নারী শিষ্য। 





বুদ্ধ খুব সাধারণ জীবন যাপন করতেন।  অনেক  ভোরে উঠে ধ্যান সাধনা করে ,  শিষ্যদের উপদেশ দিয়ে ভিক্ষার পাত্র নিয়ে লোকালয়ে বের হয়ে যেতেন।  দিনে এক বেলা  আহার করতেন,  এর বাইরে অল্প কিছু ফলমূল খেতেন।  নিজের কাপড়চোপড় বাসন-কোসন নিজে ধুতেন,  সংঘের প্রধান হিসেবে কোন সুবিধা নেননি।  বুদ্ধের  ঘোড়া বা যানবাহন কিছুই ছিল না,  তিনি শুধু পায়ে হেঁটেছেন।  বর্ষার চার মাস নির্দিষ্ট জায়গায় কাটাতেন। তিনি আন্তরিকতা,  সততা ও প্রেমের দ্বারা মানুষের মন জয় করেছেন।





৮০ বছর বয়সে মৃত্যু শয্যায় বুদ্ধ শেষ বাণী দেনঃ  জন্মিলে মরিতে হবে, তাই নিজের মুক্তির জন্য কাজ করো।  সাধনা এবং সংগ্রামে  বিরতি দিও না। 




বুদ্ধের বাণী সংকলিত রয়েছে ত্রিপিটকে।   ত্রিপিটক মানে তিনটি সংগ্রহঃ  বিনয়,  সূত্র,  অভিধর্ম।  এর মধ্যে সূত্রপিটকে বুদ্ধের উপদেশসমূহ সংকলিত থাকায় এটি বহুল পঠিত।  বৌদ্ধধর্মসহ অন্য সকল ধর্মের মধ্যে জনপ্রিয় ধম্ম পদ কাব্য সূত্রপিটকের একটি অংশ। বুদ্ধের শিক্ষার মূল বিষয়গুলো হলোঃ পঞ্চশীল বা পাচটি নীতি মেনে চলা, পাঁচ ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণ করা, জ্ঞানের সাতটি উৎসের সন্ধান ও রক্ষা করা, অষ্টাংগিক সোনালী পথ পার করা, চার মহাসত্য জানা, পুন্যার্জনের চারটি সহজ উপায় চর্চা করা , মনে চারভাব জাগ্রত করা। 




বুদ্ধের বানী  ধর্ম চর্চার বাইরে্ শুধুমাত্র জ্ঞান, দর্শন, কাব্যসাহিত্য ও  নীতিবিদ্যার  জগতে এক বিস্ময়ের নাম। 




পড়াশোনা বা জ্ঞান অর্জন নিয়ে বুদ্ধের একটি মন্তব্য আছে-.“জীবনে যতই ভালো বই পড় কিংবা ভালো উপদেশ শোনো না কেন, কিন্তু যতক্ষণ না তুমি সেইসবের থেকে পাওয়া তথ্যগুলোকে নিজের জীবনে ব্যবহার না করছো; ততক্ষন অবধি সেইসবের কোনো মূল্যই নেই।”



রেফারেন্সঃ গৌতম বুদ্ধ , লেখক- আবুল মোমেন।



মন্তব্যসমূহ

সর্বাধিক পঠিত

আধুনিক আমলাতন্ত্র: ওয়েবার থেকে ইভানস

চেপে রাখা অর্থণীতি: মুক্তবাজারের মিথ্যাবাজার

জাতিসমূহের অর্থনৈতিক ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত কথন

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জসমূহ

বিনির্মাণঃ ধ্বংসাত্মক সমালোচনার বৈধতা

সজল রোশানের ' রিলিজিয়াস মাইণ্ডসেট' কেমন?

ভাবাদর্শিক রাষ্ট্রচিন্তা: আলথুসেরের রাষ্ট্রপাঠ