পোস্টগুলি

এই ব্লগের পোস্টগুলো

চেপে রাখা অর্থণীতি: মুক্তবাজারের মিথ্যাবাজার

“ মুক্তবাজার অর্থনীতি রাষ্ট্রীয়  সকল রোগের মহৌষধ ।  উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিতরা  সকলেই  নিও-লিবারেল মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা করে এতদূর পর্যন্ত এসেছে।  অতীতেও তাদের বাজার আমদানি-রপ্তানির জন্য উম্মুক্ত রেখেছিল,  সর্বনিম্ন  আন্তর্জাতিক শুল্ক প্রয়োগ করা হয়েছিল,  যাতে  দেশগুলো একে অপরের সাথে প্রয়োজনমতো সেবা, প্রযুক্তি বা পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে পারে।  এতে ভোক্তারা সর্বনিম্ন মূল্যে  সরকারি বাধা ছাড়াই দেশি-বিদেশি পণ্য ও সেবা গ্রহণ করতে পারবে।   ব্যয় সাশ্রয় হবে,   সাশ্রয়কৃত  অর্থ বিনিয়োগ করে অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করবে। রাষ্ট্রায়াত্তকরণ,  বিদেশি পণ্যের আমদানি, বিদেশি বিনিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা,  দেশিপণ্যের উপর ভর্তুকি প্রদান , রক্ষণশীল বাণিজ্যনীতি মুক্তবাজার হলো নব্য-উদারবাদ অর্থনীতির অন্তরায়।  দেরিতে হলেও ১৯৮০ এর পর থেকে পৃথিবীর সব দেশ, বিশেষ করে  অনুন্নত দেশগুলো বুঝতে পেরেছে তাদেরকেও বড় ভাইদের মতো মুক্তবাজার অর্থনীতির সর্বোচ্চ চর্চা করতে হবে,  নতুবা তারা কোনদিনই উন্নত দেশের কাতারে ...

ভাবাদর্শিক রাষ্ট্রচিন্তা: আলথুসেরের রাষ্ট্রপাঠ

প্রত্যেক সমাজের একটি মোড অফ প্রোডাকশন বা উৎপাদনের প্রক্রিয়া, পদ্ধতি ও  ধরন রয়েছে । মোড অফ প্রোডাকশন বা উৎপাদন ব্যবস্থার  সুনির্দিষ্ট কিছু শর্ত থাকে।  পুঁজিবাদী সমাজ টিকে থাকে এই শর্তসমূহের পুনরুৎপাদনের মাধ্যমে।  চলমান পুঁজিবাদী  সমাজব্যবস্থা দুটি জিনিস পুনরুৎপাদন করে থাকে: একটি হলো উৎপাদনের পদ্ধতি ও  শক্তিসমূহের পুনরুৎপাদন, অন্যটি হলো   উৎপাদনের বর্তমান সম্পর্কের পুনরুৎপাদন।  মজুরির মাধ্যমে শ্রমশক্তির পুনরুৎপাদনের  বন্দোবস্ত করা হয়। শ্রমিক তার মজুরির মাধ্যমে সন্তান-সন্ততিদের বড় করে তুলে ভবিষ্যতের শ্রমিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য। যে মেশিনগুলো দিয়ে উৎপাদন করা হয় সেগুলো পুনরুৎপাদন করাও  পুঁজিবাদী ব্যবস্থার  জরুরি একটি অংশ।   আদর্শ শ্রমিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শিশুকাল হতেই  বিদ্যালয়ে পাঠানো হয় এবং প্রয়োজনমতো শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করানো হয়।  এতে তারা পুঁজিবাদী  উৎপাদন সংস্কৃতির সাথে  ধাতস্থ হতে পারে, উৎপাদনের আদব-কায়দা শিখতে পারে।   গড়ে ওঠা শ্রমবিভাগ নিবিড় ভাবে পালন করার জন্য, মান্য ক...

আধুনিক আমলাতন্ত্র: ওয়েবার থেকে ইভানস

ছবি
সূত্র: প্রুশিয়ার ইতিহাস (১৬ শতক থেকে ২০ শতকের প্রথমার্ধ) ইউরোপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।  একটি ছোট সামন্ততান্ত্রিক অঞ্চল হিসেবে শুরু করে, পরবর্তীতে এটি জার্মানির সবচেয়ে শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত হয় এবং জার্মান একীকরণের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠে।  সামরিক নিয়ন্ত্রণ, আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতি, এবং ইউরোপীয় ক্ষমতার ভারসাম্যে প্রুশিয়ার প্রভাবশালী ভূমিকা রয়েছে। প্রুশিয়া আজ আর রাষ্ট্র হিসেবে নেই, তবুও ইউরোপের ইতিহাসে এর গভীর প্রভাব রয়েছে। ফ্রেডরিক দ্য গ্রেট (১৭৪০-১৭৮৬) প্রুশিয়াকে ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করেন। ওটো ভন বিসমার্ক জার্মানির একীকরণের প্রধান কারিগর ছিলেন। ১৮৭১ সালে ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধের পর প্রুশিয়া জার্মান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে, এবং প্রুশিয়ার রাজা উইলহেম প্রথম জার্মানির সম্রাট হিসেবে ঘোষিত হন।  প্রুশিয়া জার্মানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে পরিণত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির পরাজয়ের ফলে ১৯১৮ সালে জার্মান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে এবং প্রুশিয়ার রাজতন্ত্রের অবসান হয়। ১৯১৯ সালে ভেইমার প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রুশিয়া তার স্বাধীনতা হারায়। দ্বিত...

প্র‍্যাক্টিক্যাল লিডারশিপ ১০১: মিড-টার্ম পর্যন্ত

দীর্ঘদিন মাঠ প্রশাসনে কাজ করার সুবাদে বেশ কিছু লিডারশিপ হ্যাকস খুঁজে পেয়েছি। নানা বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে বইপত্র, আইনকানুন, বিধিবিধানের পাশাপাশি  এই হ্যাকসগুলো বেশ কার্যকর। যদিও এই বিষয়গুলো পাবলিক সার্ভিস লিডারশিপ সম্পর্কিত,  তারপরেও প্রাইভেট সার্ভিসেও বেশ কাজে লাগতে পারে। বুশ স্কুল, টেক্সাস এ এন্ড এম ইউনিভার্সিটিতে এনার্জি এন্ড টেকনোলজি পলিসিতে মাস্টার্স করার পাশাপাশি নিজ আগ্রহে বছরব্যাপী লিডারশিপ ডিপ্লোমা কোর্স  করেছিলাম। এর আগে বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন ডিগ্রিতেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় পড়েছিলাম। পুথিগত  তত্বের  সাথে ১২ বছরের পাবলিক সার্ভিস অভিজ্ঞতা মিলিয়ে বেশকিছু বিষয়ের  তালিকা দিলাম। এর বাইরে আপনাদের জানামতে আরো কিছু এড করার থাকলে কমেন্টে জানাবেন। বেশি পরিচিত ও চর্চিত বিষয়গুলো সংগত কারণে বাদ দিলাম। ১. মেজাজ হারাবেন না:  চাকরি জীবনে যে কয়বার বিব্রত বা অপমানিত হয়েছি, এগুলো কোনোটাই শত্রুতা বা অদক্ষতার কারণে না। শুধুমাত্র,  কোন কারণে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ  হারিয়েছিলাম, বাজে ফলাফল পেয়েছি। সুতরাং এক সেকেন্ডে, এক মিনিট, এক ঘন্টা বা একদিনের জ...

সফলতার দীর্ঘ পথ

 হেরা গুহায় চুপ করে বসে ছিলেন, আর আল্লাহ পাক তাঁকে পছন্দ করেন বলেই ওহি নাজিল করলেন --ব্যাপারটা এত সরল না। নবী করিম সা: কে দীর্ঘ টানা ১৫ বছর হেরা গুহায় ধ্যান  করে একটা স্তরে পৌছানোর পর আল্লাহ তাঁকে নবুয়ত দান করেন। নবুয়ত পাওয়ার সাথে সাথে লোকজন দলে দলে তার কথামত ধর্মের পথে আসে নাই। নবী করিম সা: সংগঠন করা শুরু করেছেন লেইট টিনেজ থেকে। ২০ বছর বয়সে তিনি হিলফুল ফুজুল নামের একটা লোকাল  ন্যায়বিচার ক্লাব তৈরি করেন। এরপর সর্বদাই তিনি সাংগঠনিক কার্যক্রমের মধ্যে থেকে নিজের দক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছেন। নবুয়তের পর তার এসব অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা ধর্ম ও রাষ্ট্র গঠনে সাহায্য করেছে। আল্লাহ পাক যদিও তাঁকে নবুওতের জন্য পুর্বেই নির্ধারণ করে রেখেছিলেন, কিন্তু জীবনের নানা ধাপে নানা ধরণের পরীক্ষা যেমন অল্প বয়সে এতিম হওয়া, অকালে স্ত্রী-সন্তান হারানো, শত্রুদের নির্যাতন ইত্যাদির মধ্যে রেখে নবুয়ত ও ধর্ম প্রচারের জন্য একটা দীর্ঘ কঠিন প্র্সেসের মধ্যে রেখেছিলেন।  সুন্দরী বউ ভালো লাগে না, যাই গা-- এটা মনে করে ঘর থেকে বের হয়েই সিদ্ধার্থ নাম চেইঞ্জ হয়ে যাই নি।  ঘর থেকে বের হয়ে আরো ১৭ বছর কঠোর তপস্য...