সফলতার দীর্ঘ পথ
হেরা গুহায় চুপ করে বসে ছিলেন, আর আল্লাহ পাক তাঁকে পছন্দ করেন বলেই ওহি নাজিল করলেন --ব্যাপারটা এত সরল না। নবী করিম সা: কে দীর্ঘ টানা ১৫ বছর হেরা গুহায় ধ্যান করে একটা স্তরে পৌছানোর পর আল্লাহ তাঁকে নবুয়ত দান করেন। নবুয়ত পাওয়ার সাথে সাথে লোকজন দলে দলে তার কথামত ধর্মের পথে আসে নাই। নবী করিম সা: সংগঠন করা শুরু করেছেন লেইট টিনেজ থেকে। ২০ বছর বয়সে তিনি হিলফুল ফুজুল নামের একটা লোকাল ন্যায়বিচার ক্লাব তৈরি করেন। এরপর সর্বদাই তিনি সাংগঠনিক কার্যক্রমের মধ্যে থেকে নিজের দক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছেন। নবুয়তের পর তার এসব অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা ধর্ম ও রাষ্ট্র গঠনে সাহায্য করেছে। আল্লাহ পাক যদিও তাঁকে নবুওতের জন্য পুর্বেই নির্ধারণ করে রেখেছিলেন, কিন্তু জীবনের নানা ধাপে নানা ধরণের পরীক্ষা যেমন অল্প বয়সে এতিম হওয়া, অকালে স্ত্রী-সন্তান হারানো, শত্রুদের নির্যাতন ইত্যাদির মধ্যে রেখে নবুয়ত ও ধর্ম প্রচারের জন্য একটা দীর্ঘ কঠিন প্র্সেসের মধ্যে রেখেছিলেন।
সুন্দরী বউ ভালো লাগে না, যাই গা-- এটা মনে করে ঘর থেকে বের হয়েই সিদ্ধার্থ নাম চেইঞ্জ হয়ে যাই নি। ঘর থেকে বের হয়ে আরো ১৭ বছর কঠোর তপস্যার পর বোধি লাভ করে বুদ্ধ হন সিদ্ধার্থ গৌতম। এরপর আরো ৪৫ বছর তপস্যা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম করে বৌদ্ধ ধর্মের সাংগঠনিক রুপ দিয়ে গেছেন। অনেকেই বলবেন ৬ বছর তপস্যা করে তিনি বোধি লাভ করেন , কিন্তু তপস্যা শুধুমাত্র গাছের নিচে বসে ধ্যান করার মধ্যে না- বরং ঘর থেকে বের হওয়ার পর পুরো সময়টাই ছিল তপস্যা।
ধর্মের বাইরে এসে রাজনীতির কথা বলতে গেলে ঘটনা একই। ১৯১৮ তে জন্ম নেয়া নেলসন মেন্ডেলা ১৯৪০ এর দিকে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত কয়েকবার জেলে ঢুকেন আন্দোলনে অংশ নিয়ে। ১৯৬২ তে ঢুকে টানা ২৭ বছর জেল খেটে বের হন। এরপর কালোদের অধিকার প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে ১৯৯৪ তে সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট হন। অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু ১৮ ধাপে জীবনের এক চতুর্থাংশ সময় (৪৬৮২ দিন) জেল খেটে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। তিনি কবে থেকে শুরু করেছেন, কতদিন কি করেছেন -এগুলো সবাই জানে।
রাজনীতির বাইরে এসে সায়েন্স নিয়ে বলা যায়। মাইকেল ফারাডে খুব গরীব ছিল। জ্ঞানার্জনের বিরাট নেশা ছিল তাঁর । কিছু শেখার জন্য অল্প বয়সে বই বাঁধাইয়ের দোকানে কাজ নেন। যা পেয়েছেন সব শিখে শিখে নোট নিতেন। সায়েন্সে মজা পেয়ে এ বিষয়ে ফ্রি সভা সেমিনারে গিয়ে শিখতে থাকেন। বাসার গ্যারাজে নিজের ল্যাব বানিয়ে এটা -সেটা এক্সপেরিমেন্ট চালাতে থাকেন। দোকানের মালিক তার আগ্রহ দেখে তৎকালীন নামী বিজ্ঞানী হাম্ফ্রে ডেভির সাথে কাজ করার লাইন করিয়ে দেন। ফারাডে ২১ বছর বয়স থেকে ডেভির ল্যাব- বোতল ধোয়ামোছা করত, আর তার কাছে গবেষণা শিখত। শুধুমাত্র দিনের দিনের পর দিন লেগে থাকা ও সেখার আগ্রহের কারণেই ফ্যারাডে সেই অর্থে কোন একাডেমিক শিক্ষা ছাড়াই পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী হন। বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনের গল্পটা প্রায় একই রকম৷
রাইট ব্রাদারদের ছোটবেলা থেকেই ছিল সাংঘাতিক অনুসন্ধিৎসা। নিজেদের খেলনা থেকে শুরু করে বাপের ব্যবসার ছাপাখানা খুলে লন্ডভন্ড করে জোড়া লাগাতেন তারা। স্কুল কলেজে সেভাবে যাওয়া হয় নাই। বাবার ছাপাখানা ব্যবসা মার খেলে সাইকেল সারাইয়ের দোকান দেন। তবে তাদের প্রধান কাজ ছিল এক্সিস্টিং নিউ মডেলের সব সাইকেল খুলে ইঞ্জিন থেকে শুরু করে নানা কিছু যুক্ত করে নতুন মডেলের সহজ চালিত ট্রেন্ডি বাইসাইকেল বানানো। ওদিকে ১৮৯০ এর দশকে পৃথিবীর নানা দেশে উড়োজাহাজ বানানোর প্রচেষ্ঠার শোরগোল শোনা যাচ্ছিল। এর মধ্যে ১৮৯৫ এ জার্মান বৈজ্ঞানিক অটো লিলিয়ান্থালের ফ্লাইং মেশিনে উড়ার সময় মৃত্যুর খবর দুই ভাইকে আলোড়িত করে। তারা আকাশে উড়ার বিষয়টি সিরিয়াসলি নেন। এরপর একদম লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি থেকে শুরু করে সমসাময়িক সকল বিজ্ঞানীর এ সংক্রান্ত বই পুস্তক পড়ে ফেলেন। ঘন্টার ঘন্টার শুয়ে শুয়ে পাখির উড়াউড়ি পর্যবেক্ষণ করতেন। মজার ব্যাপার হলো তখন ক্যাম্ব্রিজ- হার্ভার্ড থেকে শুরু করে বিশ্বের নামী সব বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে বড় বড় বিজ্ঞানীরা হাজার হাজার ডলার বিনিয়োগ করছিল টেকসই ফ্লাইং মেশিন বানানোর জন্য। অন্যদের তুলনায় রাইট ব্রাদারদের বিনিয়োগ অতি সামান্য। তবে একটা জায়গায় রাইট ব্রাদাররা ছিলেন আলাদা। অন্যরা সবাই বড় বড় মেশিন এর সাথে কিভাবে বাকি সব কিছু সোজাসুজি পানির জাহাজের মত করে শুন্যে ভাসিয়ে নেয়া যায় সে চিন্তা করছিল। রাইট ভাইরা তাদের সাইকেল অভিজ্ঞতার মধ্যেই রইলেন। তারা বুঝেছিলেন সাইকেলের মত তাদের ফ্লাইং মেশিনকে এডাপ্টিবল হতে হবে, নইলে বাতাসে টিকে থাকতে পারবে না, এখানে জাহাজের মত সরল রৈখিক চিন্তা করা বোকামি। ১৮৯৮ এর দিকে মোটামুটি একটা ডিজাইন দাড় করিয়ে চলে যান নর্থ ক্যারোলিনার পাহাড় আর মরুভুমিতে। একের পর এক , দিনের পর দিন টেস্ট রান করেন ও প্রয়োজন অনুযায়ী ইম্প্রুভ করেন। পরবর্তীতে ১৯০৩ সালের দিকে তারা সফলভাবে নিজের ফ্লাইং মেশিনে করে উড়তে সক্ষম হন।
দুজন জিনিয়াসকে একটু ভিন্ন চোখে দেখা যাক। প্রথমত আমরা ধরে নেই তাঁরা গিফটেড জিনিয়াস।কাজী নজরুল মাত্র ২২ বছর বয়সে বিদ্রোহী কবিতা লিখে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন। এই বয়সে এই কবিতা কিভাবে লেখা সম্ভব? পিতার মৃত্যুর পর মাত্র নয় বছর বয়সে নজরুলকে লেটো গানের দলে যোগ দিতে হয়। লেটো গান মানে ঘেটু পুত্র কমলা টাইপ গানের কাছাকাছি। সেখানে তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি দলের জন্য আরবী, ফার্সী, ইংরেজী বাংলা ইত্যাদির মিশ্র ভাষায় কাহিনীকাব্য লিখতেন। ভাবা যায়, পেটের দায়ে কত অল্পবয়সে কত কিছু করতে হয়েছে তাঁকে? এরপর স্কুল ও সৈনিক জীবনে সর্বদা নানা পঠন-পাঠন, ভাষা শিক্ষা ও সাহিত্য চর্চার মধ্যে ছিলেন। এই বারো বছরের নিরবিচ্ছিন্ন চর্চার ফল এক রাতে লেখা 'বিদ্রোহী' কবিতা।
এবার অনেকের চোখে জিনিয়াস আইনস্টাইনের কথা বলি। মাত্র ১৬ বছর থেকে তিনি সিরিয়াস বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় চিন্তা ভাবনা এক্সপেরিমেন্ট শুরু করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে গতানুগতিক চাকুরি না নিয়ে সরকারী কেরানী চাকরি নেন। যাতে অল্প সময় কাজ করে বাকি সময় ডুবে থাকা যায় নিজের চিন্তায়। টানা দশ বছর এক্টিভলি প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা গভীরভাবে চিন্তা করে ২৬ বছর বয়সে তিনি থিউরি ওফ রিলেটিভিটির একটা স্ট্যান্ডার্ড ফরমেট দাঁড় করিয়েছিলেন।
লেগে থাকা কি জিনিস এটার একটা সাবলাইম উদাহরণ হচ্ছেন কবি জীবনানন্দ দাশ। সেই অর্থে জীবন তাঁকে কিছুই দেয় নাই। বন্ধুহীন, প্রেমহীন কষ্টকর জীবনে অর্থের অভাবে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়েছে। স্ত্রীর চোখে ছিলেন ব্যর্থ স্বামী, নিজ পেশার সহকর্মীদের হাসির পাত্র। জীবিতাবস্থায় সেইভাবে কবি হিসেবেও স্বীকৃতি পান নাই। তারপরেও সেই বাল্যকাল থেকে জীবনের শেষ পর্যন্ত কবিতার সাথে ছিলেন। সকল উপেক্ষা ও সংগ্রাম তাঁকে লক্ষ্য হতে, তার প্রসেস হতে বিচ্যুত করতে পারে নাই।
শুধু বছরের পর বছর এইরকম লেগে থাকার গুণে, প্রসেসের মধ্যে থাকার কারণে পৃথিবীতে সাধারণ ট্যালেন্টের হাজার হাজার লোক সফল হয়েছেন। আবার কোটি কোটি অতিমেধাবী ধৈর্যের সাথে শেষ পর্যন্ত ফোকাসড না থাকায়, প্রসেস ডিনাই করার কারণে ঝরে পড়েছে। মেধা বিট্রে করতে পারে, প্রসেস অবশ্যই রিওয়ার্ড করে।
এ বিষয়ে ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েলের লেখা আউটলায়ার্স বইয়ে দশ হাজার ঘণ্টা রুল প্রসেসকে খুব ভালোভাবে ব্যাখ্যা দেয়। যদিও এটা এক্স্যাক্ট কোন নাম্বার না, আমাদের হার্ডওয়ার্ক ও ফোকাসের রুপক মাত্র, কিন্তু হিসেব করে দেখলে ১০,০০০ ঘন্টা মানে বিরাট কিছু। প্রতিদিন যদি কোন বিষয় তিনঘন্টা করে চর্চা করেন তাহলে সোয়া নয় বছরে ১০০০০ ঘন্টার ঘরে পৌছাতে পারবেন। এই লেভেলে গেলে এই নির্দিষ্ঠ বিষয়ে আপনার চেয়ে শক্তিশালী কমান্ড খুব বেশি লোকের থাকবে না। বেশিরভাগ লোকের চেয়ে আপনি এক্সপার্ট লেভেলের কন্ট্রিবিউট করতে পারবেন। শিক্ষানবিসি শেষে আপনার একটা ভাষা, ইন্টুইশন, ওয়ার্কিং পাথওয়ে তৈরি করে ফেলতে পারবেন। এই ইন্টেসিটি যদি আরো ১০০০০ ঘন্টা বা কাছাকাছি দিতে পারেন তাহলে ঐ বিষয়ে আপনার একটা ফ্লো চলে আসবে, প্রেডিক্ট করতে পারবেন, ভবিষ্যতের গতিপথ বলে দিতে পারবেন। নিজের তত্ব, আইডিয়া, আবিষ্কার ইত্যাদি চলে আসবে মনের অজান্তেই। সব কিছুই নখদর্পণে থাকবে, রিফ্লেক্সের কারণেই দুর্দান্ত কিছু হতে থাকবে, ফ্লো থেকেই সব উঠে আসবে, সামনে পেছনে সব পরিষ্কার মনে হবে। সব কিছু ম্যাজিকের মত বের হতে থাকবে। আবার অনেকেই দশকের দশকের পর একই কাজ করে গেলেও আসলে সেই অর্থে ভেতরের কলকব্জাগুলোই বুঝে উঠতে পারেন না। কারণ, বিষয়টি নিয়ে তারা প্যাশন খুঁজে পান না, জীবিকার তাগিদে করার জন্য করে যান। তারা প্রসেসের বাইরে থাকেন।
শিক্ষানবিসি দশ হাজার ঘন্টা গুরুত্বপূর্ণ। যেকোন একটা ভালো পিএইচডি করতে ( ধরুন এমেরিকায়) পাঁচ বছর লাগে। অনেকের দ্বিগুণ পর্যন্ত লেগে যায়। আগে হয়ত অনার্স মাস্টার্সে সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে কিছু সময় দিয়েছেন। এছাড়া কেউ কেউ পরে পোস্ট ডক করেন। এসব আসলে তার শিক্ষানবিশি কাল। এসব করা শেষ হলেই মিডিয়াম লেভেলে একটা এক্সপার্টিজ চলে আসে। একই ফোকাসে আরো এমন ০৮/১০ বছর লেগে থাকলে দারুণ কিছু আসা শুরু করে, দিন যত যাবে ততবেশি আউটপুট আসা শুরু করবে। সংগীত, সাহিত্য, সাংবাদিকতা, খেলাধুলা, চিন্তা , দর্শন, বিজ্ঞান, যে কোন কর্মক্ষেত্রে এগুলো প্রযোজ্য।
শিক্ষানবিশি সিস্টেম আধুনিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ পালাবদলের সাক্ষ্য। আগের দিনে কামারের ছেলে কামার, জেলের ছেলে জেলে হতো। কিন্তু ইউরোপে আধুনিক শিল্পবিপ্লব শুরু হলে কারখানা ও ম্যানেজমেন্ট লেভেলে নতুন লোক প্রয়োজন হয়। এদের সবকিছু নতুন করে সব শিখাতে হত। এরা শুরুতে এ জায়গায় হতে সে জায়গায় ছোটাছুটি শুরু করে, ফলে দক্ষতা গড়ে উঠছিল না। এর প্রেক্ষিতে কোম্পানিগুলো নির্দিষ্ট ট্রেডে দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য একই বিষয়ে টানা সাত বছর কাজ করা বাধ্যতামূলক করে দেয়। এভাবেই দীর্ঘদীন একটা বিষয় যথেষ্ট সময় ও পরিশ্রম দিয়ে শেখার জন্য আধুনিক শিক্ষানবিসি সিস্টেম গড়ে উঠে।
অন্যকিছু বাদ দিয়ে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া সাধারণ ঘটনাগুলোই ব্যাখ্যা করি। যে দুচার জন টপ লেভেলের পাবলিক সার্ভিস লিডার, পলিটিক্যাল লিডার, কর্পোরেট লিডার দেখেছি: কেউ এই ছকের বাইরে নাই। যিনি মিনিস্ট্রির সেক্রেটারি হিসেবে ভাল তিনি এসিট্যান্ট কমিশনার থেকেই ভালো হওয়ার প্রচেষ্ঠার মধ্যে ছিলেন, যিনি সিইও হিসেবে সফল তিনি ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসবেও ইম্প্যাক্ট রাখতেন, যিনি এডিটর হিসেবে ভাল তিনি সাব-এডিটর হিসেবেও সকলের কাছে চোখে পড়েছেন। সুযোগ পেলে হটাৎ করে দুনিয়া উল্টায়ে ফেলব, এই ধারণা নিয়ে বসে থাকলে আপনি কোন সুযোগই পাবেন না। এমনকি যারা পূর্বপুরুষের মাধ্যমে সৌভাগ্যের ছোঁয়া পেয়েছেন, তারাও নিজেদের যোগ্যতা অর্জনে ব্যার্থ হলে সব কিছু হাতছাড়া হতে দেখেছি শতবার। আবার যাদের সফলতার ক্রেডিট পারিবারিক ও ভাগ্যের উপর দিয়ে দেয়া হয়েছে, তাদের অনেকের পরিশ্রম, ডেডিকেশন, ওয়ার্ক এথিক চোখ ছানাবড়া করে দেয়ার মত।
একেবারে স্ট্রিট লেভেলে চিন্তা করি। হঠাত করে পরীক্ষার দু-চার মাস আগে খুব পড়ে আপনি জিআরই, বিসিএস, আইবিএ, বুয়েট, মেডিক্যাল এডমিশনে ভাল করতে পারবেন না। আপনাকে যে কোন ভাবেই হোক ৫/৭ বছর বা তারো অধিক সময় ধরে কন্সিটেন্সলি লেগে থাকতেই হবে, এর বাইরে খুব বেশি আর বিকল্প নাই। আমাদের খালি চোখে আউটপুট আর ট্যালেন্ট ধরা পড়ে, কিন্তু পেছনের পরিশ্রম, ফোকাস, ডেডিকেশন, রিগোরাস প্রসেস আতশী কাঁচ দিয়ে দেখা হয় না। দেশে বাজে একটা ব্যাপার আছে! কেউ অল্প পড়ে ভাল রেজাল্ট করলে বিরাট কুতুবীপনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ভাই, আপনি যদি অল্প পড়ে বেশি পারেন, তাইলে বেশি পড়ে ঐ বিষয়ের নাড়ী-নক্ষত্র আয়ত্ব করে নিজেই নতুন কিছু করে ফেলেন। জাস্ট বি ইন দ্যা প্রসেস।
আসলে, শর্টকাটে সলুশ্যন একটা ইলিউশন, কারো কারো কাছে আপনার পকেট থেকে টাকা খসানোর পুঁজি।
পৃথিবীতে সবচেয়ে ইম্প্যাক্টফুল শর্টকাট হচ্ছে শুই-শাইড করা। অল্পতেই বিরাট হৈচৈ ফেলে দিতে পারবেন। বিষয়টি বাস্তব ও রুপক দুই অর্থেই সঠিক। হঠাৎ কেউ কিছু দিয়ে দেবে, সাডেন বড় কিছু হয়ে যাবেন, এই ধারণা নিয়ে বসে থাকা আসলেই শুই-শাইড।
থ্যাংক ইউ।
ইন্সপায়ার্ড ফ্রম: মাস্টারি- রবার্ট গ্রিন
রিপোস্ট😀
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন