কিভাবে হবেন ৩৬০ ডিগ্রি নেতা?

 অযথা নাকউচা ভাবের জন্য সারাজীবন ক্যারিয়ার ও মোটিভেশনাল বইগুলো খুব বেশি পড়া হয় নি। পরে হিসেব করে দেখলাম,  গতরদিয়ে  মাসওয়ারি কামলাখেটে বেচে আছি, খামাখাই ভাব নিয়ে লাভ নাই। আর সারাজীবন এসব করেই পার করে দিতে হবে।

আসলে কাজ করতে গিয়ে অন্যেরটা দেখে নিজে খেটে ভুলচুক করে আমাদের শিখতে হয়। এটা বেশ সময়সাপেক্ষ। এর চেয়ে যারা এই লাইনে বছরের পর বছর কাজ করে গবেষণা করে কিছু লিখেছেন তাদের বই পড়লে কিছু সুনির্দিষ্ট ডিরেকশন পাওয়া যায়। অন্ততপক্ষে নিজে ভুল নামের অভিজ্ঞতার দারস্থ হওয়া লাগে কম।

যারা চাকুরি করি অথবা ছোট-খাট- মাঝারি ব্যাবসা করি তাদের সফলতা কমবেশি নির্ভর করে ৮৫-৯০% নিজের ব্যাক্তিত্ব,  কমিউনিকেশন,  নেতৃত্বগুণের উপর। বাকিটা জ্ঞান কিংবা ভাগ্যের উপর। আর সারা কর্মজীবনে হাতেগোনা দুএকজন বাদে সকলেরই  কারো অধীনস্ত হয়ে সাথে সাথে নিজের কিছু অধীনস্ত লোকদের নিয়ে কাজ করতে হয়, সমপদের থাকে অনেকেই। অর্থাৎ কর্মজীবনে সফল হওয়ার জন্য আমাদের আপ-ডাউন-এক্রস সবধরণের নেতৃত্বগুনের প্রয়োজন হয়।

মিঃ ম্যাক্সোয়েল এর কনসেপ্টগুল চমৎকার লেগেছে। অনেক ভুল ধারণা ভেংগে গেছে, নতুন শিখেছি অনেক কিছুই। তার মতে যে কোন একটি প্রতিষ্ঠানের সফলতা মাপকাঠি হচ্ছে তার নেতৃত্বের উপর, নেতার ক্যালিবার যতটুকু সংগঠন আগাবে ততটুকুই।  একজন আদর্শ নেতার প্রধান গুণ ইনফ্লুয়েন্স করার ক্ষমতা, স্যাক্রিফাইস করা, দায়িত্ব নেয়া,  নিজে পরিশ্রম করে উদাহরণ তৈরি করা এবং ক্রেডিট সিকিং মানসিকতা পরিহার করে অন্যদের ক্রেডিট দিয়ে দেয়া। বসের অনেক কিছু ভাল না লাগলেও তার নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা ও তার শক্তির জায়গা গুলো এপ্রেশিয়েট করা।  সমপদের লোকজনের সাথে পলিটিক্স করে চাপে না রাখা ও অধীনস্তদের নেতৃত্বগুণকে বিকশিত করতে দেয়া। অধীনস্ত কেউ আপনাকে ছাড়িয়ে গেলেও জেলাস না হয়ে তাকে প্রমোট করা, দায়িত্ব দিয়ে আস্থা রাখা ও সফলতার জন্য সকলের সামনে এপ্রেশিয়েট করা ও পুরস্কৃত করা। বকাবাদ্য করার দরকার হলে আলাদা করে লুকিয়ে করা। এসব করলে সাথে সাথে  ফলাফল না পেলেও দিনে দিনে আপনি নেতৃত্বগুনে সকলের থেকে আলাদা হয়ে যাবেন এবং এটাই আপনার শক্তি হিসেবে  গণ্য হবে।

মি: ম্যাক্সওয়েলের মতে নেতা পাচ প্রকার।  পজিশনাল, পারমিশন, প্রোডাকশন , পিপল ডেভেলপমেন্ট ও পিনাকল। ধীরে ধীরে চর্চা করে উপরের দিকে উঠতে হয়। নেতৃত্ব একক কোন কাজের সফলতার উপর নির্ভর করে না। একজন নেতা ধীরলয়ে সকল গুনাবলী অর্জন করে একটি ইমেজ বা ব্র‍্যান্ড ভ্যালু তৈরি করেন। স্বল্পকালীন সময়ে এটি কার্যকর মনে না হলেও দীর্ঘ মেয়াদে এটি ব্যক্তিকে সকলের মধ্যে আলাদা করে তুলে ধরে।


মন্তব্যসমূহ

সর্বাধিক পঠিত

আধুনিক আমলাতন্ত্র: ওয়েবার থেকে ইভানস

চেপে রাখা অর্থণীতি: মুক্তবাজারের মিথ্যাবাজার

জাতিসমূহের অর্থনৈতিক ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত কথন

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জসমূহ

বিনির্মাণঃ ধ্বংসাত্মক সমালোচনার বৈধতা

সজল রোশানের ' রিলিজিয়াস মাইণ্ডসেট' কেমন?

ভাবাদর্শিক রাষ্ট্রচিন্তা: আলথুসেরের রাষ্ট্রপাঠ