পোস্টগুলি

জানুয়ারী, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ডোনাট মডেলঃ প্রয়োজন নতুন অর্থনৈতিক কাঠামোর

ছবি
  – ভাত দিবার পারোস না ভাতার হবার চাস-  কেমন মরদ তুই হারামজাদা?-কাজী রোজী প্রচলিত এই অর্থনীতি কিছুই দিতে পারেনি।  পৃথিবীর সবাইকে দুবেলা দুমুঠো ভাত দিতে পারেনি,  সবার মাথা গোঁজার  ঠাই দিতে পারেনি। প্রতিরোধ দূরের কথা,  এ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা  নিজেই বলতে পারে না সে কবে  ধ্বসে পড়বে।  অল্প কজন মানুষকে সম্পদের পাহাড় গড়তে দিয়ে,  সকলকে করেছে নিঃস্ব- - এ প্রকৃতি ও পরিবেশকে করেছে রিক্ত।  পুরনো আমলের বাসী-পচা এ তত্ত্বগুলো আমরা আওড়ে যাই,  পড়ে যাই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে।  ধরে নেই এ জিডিপির গ্রোথ,  সাপ্লাই-ডিমান্ড থিওরি কিংবা, নিউটনের পদার্থ বিজ্ঞানের  অনুকরণে  জোর করে তৈরি  স্লিম-সেক্সি- অর্থনৈতিক সমীকরণগুলো আমাদের সকল সমস্যার সমাধান করবে।  কিন্তু হায়! এ বড্ড  সেকেলে, অপ্রয়োজনীয্‌  চাপিয়ে দেওয়া তত্ত্ব ও প্রয়োগ চেপে বসেছে সিন্দাবাদ এর ভূতের মত- না আমরা পারি ছেড়ে দিতে- না সে আমাদের ছেড়ে যায়।   প্রচলিত এই অর্থনীতি শেখায় যোগান-চাহিদার সাম্যবস্থা তৈরি করা; বছর বছর লাফিয়ে লাফিয়ে গ্...

ইয়োভাল নো. হারারি কি বলতে চান?

ছবি
  আসলে তিনটা বই এর রিভিউ একসাথে দেয়া যায় না, তাই রিভিউ হিসেবে না দেখে পরিচয় হিসেবে দেখতে পারেন। ইয়োভাল নোয়াহ হারারিকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই, তার একটি বই পড়লে বাকি দুইটিও নিজ থেকেই পড়ে নেবেন-এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। বলছি সেপিয়েন্স, হোমো ডিউস ও ২১ লেসন্স ফর দ্যা টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি --এই তিন বই এর কথা। সেপিয়েন্সঃ এটি বহুল পঠিত , প্রচলিত। স্বল্প পরিসরেই ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের ইতিহাসকে ব্যাখ্যা করেছেন। তুলে এনেছেন কিভাবে ধাপে ধাপে মহাবিশ্বে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আফ্রিকার জংগল হতে কিভাবে মানুষ কিভাবে সারাদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ৭০হাজার বছর আগের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ , ১০ হাজার বছর আগের কৃষি বিপ্লব ও কয়েকশ বছর আগের শিল্পবিপ্লবের হাত ধরেই মানুষ এগিয়েছে। সেপিয়েন্স তার নিজের অগ্রগতির জন্য ধ্বংস করেছে লক্ষ লক্ষ প্রজাতির প্রাণী ও বৃক্ষ । তবে তার গল্প তৈরির ক্ষমতার কারণে সংগঠিত হয়ে ছাড়িয়ে গেছে সকল প্রাণিকুলকে, পৃথিবীর শাসক এখন মানুষ। হোমো ডিউসঃ হারারি এ বইতে ভবিষ্যতের মানুষ নিয়ে কিছু আভাস দিয়েছেন । দ্রুত অগ্রসরমান আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স , বায়োটেকনল...

সজল রোশানের ' রিলিজিয়াস মাইণ্ডসেট' কেমন?

ছবি
  ইসলাম ধর্ম নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর শুধু খুজেই গেছি, বিভিন্ন সোর্সে ঢু মেরেছি, বেশিরভাগ সময় কনফিউজড হয়েছি। কোথা থেকে আসল শিয়া -সুন্নি, হানাফি, হাম্বলি, শাফেয়ী, আহলে হাদিস, সুফিবাদ, তাব্লীগ, পীরবন্দনা ইত্যাদি নানা জানা অজানা ভাগ -উপভাগ? ফাজায়েলে আমল, ফাজায়েলে জিকির, মুক্সুদুল মুমিনীন, সিহাহ সিত্তাহ সহ নানা প্রখ্যাত- অখ্যাত হাদিস, ফিকাহ, তাফসির বই এ লেখা একেক দর্শন, ব্যাখ্যা, সমাধান, নির্দেশনা মাঝে মাঝেই কনফিউজিং মনে হয়েছে৷ একেকটার সাথে আরেকটা মেলে না, কিছু সরাসরি জানাশোনা কোরানের আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক মনে হত। আমাদের প্রচলিত আচার, অনুষ্ঠান, উতসব, পোশাকি, কালচার, জমায়েত, হুজুর, মুরুব্বী, গ্রুপিং ভিত্তিক ধর্মচর্চা কতটা সঠিক? আল্লাহ তায়ালা যেখানে কোরানকে কম্পলিট ও ডিটেইল জীবনাদর্শ হিসেবে ঘোষণা করেছেন কিন্তু কোরানের ব্যাখ্যা বা অস্পষ্টতার দোহাই দিয়ে সহস্র অপ্রয়োজনীয় হাদিস, তাফসির, ফিকাহ, ইজমা কিয়াস দিয়ে ধর্মকে কতটা কলুষিত করেছি? এসবের কোরানিক ভিত্তিটাইবা কি? আর এ পলু্শনগুলো কখন কিভাবে হয়েছে? আল্লাহ তায়ালা নিজেই যেখানে বিশ্বাস ও সতকর্মকে জান্নাতের পূর্বশর্ত দিয়েছেন, বলেছেন যারা...

পুরানা পল্টন ( পদ্য)

  সিটি কর্পোরেশনের হলুদ আলোয় অনন্তকাল মাটির নিচে মূল্যবান খনি খনন, আর টোকাই বালকদের পলিব্যাগে জুতার আঠার সাথে লেগে থাকা ঢুলু ঢুলু হেঁটে চলা রাস্তার মোড়ে পরিনামদর্শী ট্রাকড্রাইভারদের হুটহাট এলোমেলো ব্রেক কষা নেড়িকুত্তা দলের একত্রে ঘেউ ঘেউ কমিউনিস্ট বিল্ডিংএ আবছা অন্ধকার বারান্দায় নিকোটিনমেলা বাঁশিওয়ালা পুলিশের ঘুমভাঙ্গানি গানের সুরে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয় ফুটপাতবাসী আর এলোমেলো বাতাসে উড়ে আসা হঠাৎ ধুলিঝড় খুক খুক কাশি অসহায় চাহনি ভালোবাসা বিক্রির আসায় ভালোবাসার ফেরিওয়ালা চোখের জল বাষ্প হয়ে মিশে যায় ট্রাকের ধোয়ায় মোড় যেন এক আশ্চর্য ঘোরলাগা। - শূন্যের পেছনে ছুটে চলা শূন্যের শূন্যতা খুঁজে ফেরা আর শূন্যের গান গাওয়া গভীর রাতের জীবন যেখানে আমায় বানায় আর্যভট্ট আর্য-সিদ্ধান্তের পুরান পল্টন মোড় ভালবাসার মত শুধুই শূন্যতা আর পাই এর মত দুপায়ে শুধুই ঝুলে থাকা।

ছফার পুষ্প বৃক্ষ ও বিহঙ্গ পুরান বইতে কি আছে?

  ধরুন আপনি আহমেদ ছফার কোন বই আগে পড়েন নি, তাকে তেমন ভালো ভাবে জানেন না।   এ বইটি পড়ে বড় মাপের একজন আউলা টাইপ হিসেবে আবিষ্কার করবেন। একজন মানু্ষ কিভাবে একধরণের ঈর্ষণীয় আনন্দঘন জীবনযাপন করতে পারেন -যেসব আনন্দ আমরা সাদা চোখে বা চশমা লাগিয়ে কোনভাবেই খূজে পাই না! এই আনন্দগুলো আবিষ্কার করে  তিনি দেখিয়েছেন ' পুষ্প বৃক্ষ ও বিহঙ্গ পুরান' বইয়ে। আপাত দৃষ্টিতে অনর্থক কিংবা দৃষ্টির সীমানার বাইরে  থাকা ছোট ছোট বিষয়গুলো কিভাবে নিজের মত পরিচর্যা করে আনন্দ খুজে বের করে নিতে হয় ছফা নতুন করে শিখিয়েছেন। আমাদের পাশে পড়ে থাকা পতিত জমি, বাসার কোনার পাখির বাসা কিংবা পাখির গান কিংবা রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো টোকাই শিশুদের বাল্য শিক্ষার আয়োজন- সবকিছুই ছফাময় করে তুলেছেন লেখক তার এ বইয়ে। পতিত জমি আবাদের কথা বলেছেন , ক্ষুধার্তকে আয়োজন করে  খাওয়ানোর কথা বলেছেন। প্রচন্ড হিউমার,  মেটাফোর আর সার্কাজম এ বইয়ের মুল শক্তি। উপন্যাসের আদলে লেখা তার খন্ডিত আত্বজীবনী। আধুনিক গদ্যসাহিত্যের বড় একটি অংশ যেমন কাফকায়েস্ক বা কাফকায়িত, আমার মতে, ছফা পরবর্তী  সময়ের বাংলা সাহিত্য উল্লেখযোগ্য অংশ ছফায়িত। বই...

রিচেস্ট ম্যান ইন দ্যা ব্যাবিলন বইয়ে কি আছে?

  পৃথিবীর বুকে প্রথমদিককার আধুনিক সভ্যতা ব্যাবলনীয় সভ্যতা। প্রচলিত যে আর্থিক কাঠামো আমরা ব্যাক্তি ও রাষ্ট্রিয়ভাবে দেখতে পাই তার শুরুটা ব্যবলনীয়দের হাত ধরে। প্রথম মুদ্রা,  নোটের প্রচলন থেকে শুরু করে ব্যাংক, বীমা, ইন্সুরেন্স, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন ফান্ড,  মিউচুয়াল ফান্ড ও  শেয়ার মার্কেটের অনেক কন্সেপ্ট পৃথিবীতে এসেছে ব্যবলনীয়দের হাত ধরে। তাদের রাষ্ট্রীয় কাঠামো, সম্পদের  নিরাপত্তা ব্যাবস্থা আধুনিক যুগের অনেক তৃতীয় বিশ্বের দেশের জন্য ঈর্ষণীয়। এটি ছিল ধনীদের শহর, তারা জানত কিভাবে পরিশ্রম ও বুদ্ধির মাধ্যমে কাজ,  ব্যবসা ও  বিনিয়োগ করে আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জন করা যায়। এ বইটিতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে ধ্বংসাবশেষ হতে উদ্ধারকৃত প্রস্তর ও মাটির স্লেটে লিপিবদ্ধ করা ব্যাক্তিগত আর্থিক ব্যবস্থাপনার জন্য কিছু দুর্দান্ত ও অকল্পননীয় নীতিমালা। আসলে এ সময়ে ব্যাক্তিগত  আর্থিক ব্যবস্থাপনা  স্বম্পর্কে মোটিভেশনাল বই লিখা হয়  যেসব বই এর আব্বাজান হচ্ছে এই বইটি।  শুন্য হতে আর্থিক স্বচ্ছলতা পাওয়ার জন্য কি কি পন্থা অবলম্বন করা হত ,  কিভাবে কি পরিমাণ সঞ্চয় ও বিন...

গরু ও গাধার গল্প

  গরু ও গাধা দুই বন্ধু। মালিক গরুকে দিয়ে হালচাষ করায়,  ঘানি টানায়, সারদিন খাটায়। অপরদিকে গাধা প্রয়োজন হলে মাঝে মাঝে বোঝা টানে বাকি সময় ঘুমায়, রেস্ট নেয়। গরু তার কষ্ট হতে বাচতে পরামর্শ নেয় গাধার কাছে। গাধা বলে, তুমি মাঝে মাঝে অসুস্থতার ভান করবে। গরু মাঝে মাঝেই করে এবং আরাম করে। সেটা তার অভ্যাস হয়ে যায় এবং মাঝে মধ্যেই টানা কয়েকদিন অসুস্থ থাকে। মালিক উপায় না দেখে গাধাকেই ঘানি ও হালচাষে লাগিয়ে দেয়। গাধার এখন দুজনেরই কাজ করতে হয়। অপরদিকে গরু থেকে ভাল সার্ভিস না পেয়ে মালিক একদিন  গরুকে জবাই করে খেয়ে ফেলে। গাধার তারপর হতে পার্মানেন্টলি দুটার কাজই করতে হয়। মোরালঃ অর্বাচীন লোককে পরামর্শ দিয়ে নিজের ও তার বিপদ ডেকে আনা। সুত্রঃ দ্যা রিচেস্ট ম্যান ইন দ্যা ব্যাবিলন। লেখকঃ জর্জ ক্ল্যাসন।

সাপের মুখে ব্যাঙ

  এক ব্যাক্তি লেইকে বড়শি দিয়ে মাছ ধরছিল আর চকোলেট বার খাচ্ছিল। হঠাত দেখতে পেল একটি সাপ মুখে ব্যাঙ ধরে রেখেছে,  ব্যাঙটি চিৎকার করছিল। লোকটির খারাপ লাগল এবং সে সাপটির মুখ হতে ব্যাঙটি সরিয়ে দিল। ব্যাঙ লাফাতে লাফাতে চলে গেল। এতে লোকটি খুশি হলেও পরে সাপের কথা ভেবে তার মন খারাপ হয়ে গেল। আহা, সাপটি এখন কি খেয়ে থাকবে? তিনি সাপের দিকে চকোলেট বারটি ছুড়ে দিলেন। সাপটি সেটি নিয়ে চলে গেল। লোকটি ভাবল, এখন ব্যাঙ খুশি, সাপ খুশি, আর আমারো অনেক ভাল লাগছে।। কিছুক্ষন পর পাশেই পানিতে শব্দ শুনতে পেল। সে তাকাল এবং সাপটিকে আবার দেখতে পেল। এবার সাপের মুখে দুটি ব্যাঙ। মোরালঃ পুরস্কৃত করার ব্যাপারে সাবধান। যা পুরস্কৃত হবে তাই ফিরে ফিরে আসবে।। সুত্রঃ দ্যা  ৩৬০° লিডার, জন সি ম্যাক্সওয়েল, পৃঃ ২৪১

প্রথম আলোয় ক্যারিয়ার বিষয়ক সাক্ষাৎকার

  পত্রিকা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়লে চাকরির পরীক্ষা সহজ হয় নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০, ১১: ৩৭  তৌহিদ এলাহী > বাংলাদেশের তরুণেরা তাঁদের ক্যারিয়ার নিয়ে নানা ধরনের স্বপ্ন দেখেন। কেউ কেউ বিসিএস ক্যাডার হতে চান, কেউবা আইবিএ বা ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে এমবিএ করে করপোরেট জগতে রাজত্ব করতে চান। আবার কেউ যুক্তরাষ্ট্রসহ নানা উন্নত দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী। ৩০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী ধাপে ধাপে তিনটি সুযোগই গ্রহণ করেছেন। নানামুখী অর্জন, কর্মকাণ্ড ও পড়াশোনাপদ্ধতি প্রভৃতি নিয়ে তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মোছাব্বের হোসেন।  প্রশ্ন: আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন? তৌহিদ এলাহী: স্কুলজীবন কাটিয়েছি জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলায় আমার গ্রামের জোরখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জোরখালী উচ্চবিদ্যালয়ে। এখান থেকে ২০০২ সালে জিপিএ-৩.৭৫ নিয়ে এসএসসিও ২০০৪ সালে জিপিএ-৪.৭০ নিয়ে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ জামালপুর থেকে এইচএসসি পাস করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ থেকে প্রথম শ্...

ওয়ান মিনিট ম্যানেজার ম্যাজিক

  ব্যাবসা বা চাকুরিতে নানা পজিশন অনুযায়ী আমাদের লোকজন নিয়ে কাজ করতে হয়। ক্যারিয়ারে ভাল করতে এ  হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট খুব জরুরী, বিশেষকরে অধস্তনদের থেকে সঠিকভাবে কাজ আদায় করে নেয়া। এ জন্য নানা বই-পুস্তক,  কোর্স, লিডারশিপ গুরুরা নানান ছবক দেন৷  সবকিছু বাদ দিয়ে  কিছু অতি সাধারণ কিন্তু কার্যকরি টেকনিক ও টুলস ব্যবহার করে কাংখিত সফলতা পাওয়া যায়। অন্যদের থেকে সবচেয়ে ভাল কাজ আদায় করার জন্য ম্যাজিক কোন ফর্মুলা নেই। হয়ত জটিল অনেক তত্ব আছে, দিনশেষে কাজটা ঠিকঠাক হলো কিনা সেটাই আসল। প্রথমত,  তাদের কাছে কি কাজ চান, সেটা সুনির্দিষ্ঠ করে ছোট  সাইজে টাইম বাউন্ড  লিখে দেয়া। অর্থাৎ এখানে আপনার চাওয়া ও পাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত পরিষ্কার, কোন গ্যাপ রাখার সুযোগ নেই। কাজের গোল সেটিং পরিষ্কার হয়ে গেলে,   শুরুর দিকে তাকে মনিটরিং এর মধ্যে রাখা । সে ভুল করল কিনা সেটা কম দেখে সে যখন ভাল কিছু করল সেটি নোটিশ করে তাকে প্রশংসা করা। আর কখনো ভুল করলে সেটা তাকে তৎক্ষণাৎ বলে দেয়া, আপনি হতাশ বা বিরক্ত হয়েছেন সেটা জানিয়ে দেয়া। এটা ট্রিকি। আপনার এই রিপ্রাইম্যান্ড বা বকাঝকা ব্য...

আমার পূর্ব-পুরুষের কথা বলছি

  " আমি কিংবদন্তির কথা বলছি- আমি আমার পূর্ব-পুরুষের কথা বলছি--" তিনি বিস্তৃত ইতিহাসের অত বড় কেউ হয়ত নন, কিন্তু তিনি ছিলেন খন্ডিত ইতিহাসের মহানায়ক। সারাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহাকাব্যে ছোট চরিত্র হলেও, জামালপুর বা বৃহত্তর ময়মনসিংহের ইতিহাসের বীর সিংহপুরুষ। তিনি ১১ নং সেকটরের কোম্পানি কমান্ডার আবু হাসানাত মুক্তা, মুক্তা কমান্ডার বা মুক্তা কোম্পানি নামেই বেশি পরিচিত। জনাব আবু হাসনাত মুক্তার যুদ্ধকালীন বীরত্বের কথাগুলো রুপকথার মত ছড়িয়ে আছে অত্র এলাকার লোকমুখে, ছোটবেলা হতেই হাজারো মানুষের মুখে শুনেছি তার অসীম সাহসী বীরত্বগাথা। তিনি ছিলেন জীবন্ত কিংবদন্তি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে যুদ্ধে অংশগ্রহণের নিমিত্ত ভারতের মহেশপুরে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর কোনরুপ সামরিক ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকলেও কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পান শুধুমাত্র তার অসীম সাহসীকতা, তেজ ও সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য। তিনি নিজে একা যান নি, মুক্তিযুদ্ধে তিনি সাথে করে নিয়ে গেছেন আপন দুই ভাই, এবং আমার বাবাসহ আরো তিন কাজিনকে। পাশাপাশি স্কুল কলেজের সহপাঠী,  বন্ধু  ও এলাকার সমবয়সী শতশত যুবককে তার সাথে যুদ্ধ...

মানুষের সুখ-দুঃখ নিয়ে তিনটি ব্যাখ্যা

  মানুষের সুখ-দুঃখ নিয়ে  তিনটি ব্যাখ্যা আমার ভাল লাগে। ১. বুদ্ধের দর্শনঃ যখন মানুষ কষ্টে আছে বলে মনে করে এবং তা দূর করার জন্য নানারকম শারিরীক ও মানসিক যাতনার মধ্যে দিয়ে যায়, আরো  কষ্ট করে--যাতে তার দুঃখ দূরীভুত হয়, কিন্তু আসলে এটা  তাকে আরো অসুখী করে। আবার যখন কোন মানুষ নিজেকে সুখী মনে করে এবং তা চিরস্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য নানারকম মানসিক ও শারীরিক কষ্ট করে, এটা তাকে আরো দুঃখের মধ্যে ফেলে দেয়। অর্থাৎ আপনার সুখ অর্জন বা দুঃখ দূর করার অতি উপায় না খূঁজে বেড়ানোই আপনাকে সুখী রাখতে পারে। অবস্থার পরিবর্তনের আকাঙখা কিংবা বর্তমানকে সজোড়ে আকড়ে ধরে রাখার প্রচেষ্ঠাই আপনার সুখ কেড়ে নেবে। ঠিক কাছাকাছি ধরণের ব্যাখ্যা পাওয়া যায় দুঃখবাদের দার্শনিক আর্থার শোপেনহাওয়ারের কাছে।  তার মতে, রিপিটিভ প্লেজারকেই সুখ বলে। দুনিয়াতে দুঃখের চেয়ে সুখ কম, সুখ ক্ষণস্থায়ী।  আপনার সুখী হওয়ার আকাংখা অন্যের দুঃখের দামে কেনা। অর্বাচীন লোকদের বদভ্যাস হচ্ছে সুখ শিকার করে বেড়ানো। নিজের মধ্যে সুখ খুজে পাওয়া কঠিন, অন্য কোথাও পাওয়া অসম্ভব। ২. সায়েন্সঃ সুখ-দুঃখের  জন্য দায়ী হরমোনের হ্রাস-বৃ...

অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহারজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশের সামগ্রিক সাফল্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এটি এখন বিশ্ব স্বীকৃত। বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া, শিশুমৃত্যু ইত্যাদি সমস্যা দূরীকরণে আইন প্রয়োগ ও সরকারি ব্যবস্থা গ্রহণ দৃশ্যমান ভূমিকা রেখে আসছে। পাশাপাশি সমস্যাগুলো নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি সব সময়ই কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। দেশের মোটামুটি সব নাগরিক সমস্যাগুলোর কথা এবং এর প্রতিরোধের উপায় এরই মধ্যে জেনে গেছে। ফলে এসব ক্ষেত্রে আমাদের সাফল্য উল্লেখযোগ্য। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) থেকে আমরা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম একটি লক্ষ্য হচ্ছে সবার জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্য অর্জনের সঙ্গে অন্য প্রায় সব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশে নির্বিচারে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যগত, সামাজিক ও পরিবেশ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবার জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যটি ক্রমান্বয়ে ধূলিসাৎ হয়ে যেতে পারে যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার এবং এই অপব্যবহারের বিরুদ্ধ...

ব্যাঙ কালচার, গ্যাং কালচার

  আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০২: ৪৫  ঘটনার কাল বেশি দিন আগের নয়। বড়জোর বছর পনেরো-বিশেক। ব্যাপারটা ছোট মফস্বল শহর কিংবা গ্রামের পরিচিত দৃশ্য। ছেলেরা খেলত দল বেঁধে। দলে ভালো ছেলেরাও খেলত, খেলত দুষ্ট ছেলেরাও। শান্ত পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ছেলেরা ঢিল ছুড়ে দিত। পানির পৃষ্ঠ টানের প্রভাবে ঢিল ব্যাঙের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে দুই-তিন গোত্তা খেত। কার ঢিল কয়টা লাফ দেয়, তা নিয়ে মহা কমপিটিশন। তবে অতি দুষ্টদের এত নিরামিষ খেলায় সব সময় পোষাত না। তারা হালকা কিংবা ভারী বর্ষা-বাদলের দিনে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর করা ব্যাঙদের লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়ত। এতে দুই-চারটা ব্যাঙ চিৎপটাং হতো। এ দেখে পাশের বাড়ির মুরব্বি হাঁক দিতেন, ‘এই, দুষ্টামি করিস না। দুষ্টামি করলে ঠ্যাং ভেঙে দেব।’ তারা স্কুলের র্যাপিড রিডিং বা দ্রুত পঠনে পড়ত ‘দুষ্ট ছেলে ও কথা বলা ব্যাঙ’। গল্প পড়ে অনুশোচনায় ভুগত দুষ্ট বালকেরা। আহা! আমাদের জন্য যা ক্রীড়া, তাদের জন্য জীবনের প্রশ্ন। এলাকার মুরব্বির তিরস্কারে কিংবা স্কুলের র্যাপিড রিডারের প্রভাবে বালকেরা দু-চারবার এমন করার পর এ খেলায় আনন্দ হারিয়ে ফেলত। দলে সরদার বালকের প্ররোচনায় দিনে দিনে ফুটবল-কাবাডির দল গড়ে তুলত।...

ঐতিহাসিক ও দার্শনিক উইল ডুরান্ট এর মূল বক্তব্য

  ইতিহাসে যখনই নির্দিষ্ট অঞ্চলে  অর্থনৈতিক প্রাচুর্য , রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা,  নীতিবোধের উন্নয়ন ও জ্ঞান-বিজ্ঞান-শিল্প সাধনা শক্তিশালী হয়েছে, সেখানেই সভ্যতার বীজ অঙ্কুরোদগমিত হয়ে শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত হয়েছে ও ডালপালা চারদিকে ছড়িয়েছে। আমরা এখন যা করি তা আমাদের মধ্যে এসেছে হাজারো বছরের চর্চা ও পরিবর্তনের  মধ্য দিয়ে। দশ হাজার বছর আগে শিকারী ছিলাম, এখনো দুর্বলদের মেরে আনন্দ পাই। সামনে খাবার পেলে সবকিছু গোগ্রাসে খাই, কারণ এমনটাই করেছে আমাদের পূর্বপূরুষেরা। তারা শিকার বা সামনে কোন খাবার পেলে প্রথমে নিজেদের উদরপূর্তি করত গলা পর্যন্ত। অনেকে খাবার সংগ্রহ করে রাখা বা ভবিষ্যতের জন্য কাজ করাকে অপমানজনক মনে করত। নানা পর্যায়ে তারা নানা ধরণের খাবার খেয়েছে-তার মধ্যে সবচেয়ে মজাদার হচ্ছে স্বজাতির মাংস। আদিম সমাজ সাম্যবাদী,  জঙ্গলে কেউ খেতে বসলে খাওয়ার আগে চিৎকার করত, যাতে আশে পাশে কেউ ক্ষুধার্ত থাকলে সে খেতে পারে। তারা একে অপরের প্রতি অত্যন্ত বিবেচকের মত আচরণ করত যা সভ্য সমাজে দেখা যায় না। তবে সম্পত্তি সকলের হওয়ায় কেউ কেউ অলস আচরণ করে সুবিধা নেয়ার চেষ্ঠা করত। আদিম সমাজ যতদিন এ সা...